ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রায়েল বা সংক্ষেপে ভিভিপ্যাট এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণ। তবে বহু আগে থেকেই বিভিন্ন নির্বাচনে এই অত্যাধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার হলেও সার্বিকভাবে প্রতিটি বুথে ভিভিপ্যাট এর ব্যবহার হবে এই প্রথম। মূলত নির্বাচনে কারচুপি রুখতেই এই যন্ত্রের ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের ব্যাপক সাফল্যের পর বিরোধীদের পক্ষ থেকে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)এ কারচুপির কথা বলা হয়। পাশাপাশি, এই মেশিনে যে সত্যিই কারচুপি করা সম্ভব সে বিষয়ে ডেমোও প্রদর্শন করা হয়। সব মিলিয়ে সেবার বিজেপি তথা এনডিএ জোটের সফলতার জন্য ইভিএমকে কাঠগড়ায় দাড় করায় কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল। এমনকি স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য অনেকেই যন্ত্র চালিত ভোটিং মেশিনের পরিবর্তে ব্যালট পেপার ব্যবহারের কথাও বলেন। যদিও জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইভিএম এর পক্ষেই সায় দেয়। তবে এই যন্ত্রের ব্যাপারে মানুষের সন্দেহ দূর করতে ইভিএম এর সাথে আরও একটি যন্ত্রের সংযোগ করা হয়, যার পোশাকি নাম ভিভিপ্যাট। শেষ সাধারণ নির্বাচনে এই মেশিন কেবল বিশেষ কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়েছিল। যাকে ভিভিপ্যাট এর ট্রায়েলও বলা যেতে পারে। কিন্তু এবার প্রত্যেকটি বুথেই এই মেশিন ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। যদিও এই মেশিনের কার্যকরিতা সম্পর্কে পুরপুরি ওয়াকিবহাল নন রাজ্যের ভোটকর্মী থেকে আরম্ভ করে সাধারণ ভোটার। ফলে এই ভিভিপ্যাট সম্পর্কে ভোটকর্মী ও ভোটারদের অবগত করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এব্যাপারে বছরের শুরুতেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতন করতে ক্যাম্প করে এই যন্ত্রের প্রদর্শন করা হয়। এরপর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রদর্শনী চালু করা হয়। ঠিক কি ধরনের কাজ করে এই ভিভিপ্যাট মেশিন? নির্বাচন কমিশন সুত্রে খবর, বিশেষত, ভোটার তার প্রদেয় ভোট নিরদ্রিস্ত প্রতীকে পড়েছে কি না তা যাচাই করতে এই মেশিন ব্যবহার করতে পারবে। এতদিন কেবল ভোট দিয়েই বুথ থেকে বেরিয়ে আসতে হতো ভোটারদের। সেক্ষেত্রে তাঁর ভোট সঠিক প্রতীকে পড়েছে কি না তা যাচাইএর কোন সুযোগ ছিল না। এবার ভিভিপ্যাট ব্যবহারের ফলে সেই সুযোগ থাকছে নির্বাচকদের সামনে। কমিশন সুত্রে আরও জানা গিয়েছে, ইভিএম এ ভোট দানের পর ভিভিপ্যাট মেশিনের ডিসপ্লে বোর্ড এ কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা যাবে সেই প্রতীক যেখানে ভোটার তার ভোট দান করেছে। যদিও এর কোন স্লিপ বা হার্ড কপি ভোটার পাবে না। শুধুমাত্র নিজের ভোট সঠিক জায়গায় পড়েছে কি না তা দেখতে পাবে সংশ্লিষ্ট ভোটার। এদিকে এই নতুন মেশিন সম্পর্কে ভোটকর্মীরা এখনও তেমন ভাবে ওয়াকিবহাল নন সেকারনে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান বারাসত, বনগাঁ, বসিরহাট, বিধাননগর সহ বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে ভোটকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের অবগত করার চেষ্টা চলছে। তবে প্রত্যেককে যেহেতু আলাদা আলাদা ভাবে হাতে কলমে এই মেশিনের ব্যবহার বোঝানো সম্ভব নয় সেহেতু ক্যাম্পের মধ্যে টেলিভিসনের মাধ্যমে ডেমো দেখিয়ে এই মেশিন সম্পর্কে যাবতীয় সন্দেহ দূর করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেবারে স্কুলের মতো করে ব্ল্যাক বোর্ডের জায়গায় টিভি স্ক্রিন লাগিয়ে ভোটকর্মীদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। আর এই ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতনতা যাতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক ভাবে প্রসারিত হয় সেজন্য জেলার বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, শপিং মল, স্কুল, কলেজ, বাজার এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় এই প্রদর্শনী চলবে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসনের তরফে। এবিসয়ে জেলা শাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ইভিএম এর সাথে সংযুক্ত এই নতুন মেশিন ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সহ ভোট কর্মীদের সচেতন করতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন। জেলা জুড়ে এই কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। বিশেষত বারাসত কালেক্টর অফিসের সামনে যে প্রদর্শনী ক্যাম্প রয়েছে সেটি বেশ কিছুদিন চলবে যাতে জেলার প্রশাসনিক ভবনে আগত মানুষ এখান থেকে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন। পাশাপাশি যদি কোন ভোটার ভোটের দিন এই মেশিন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তবে তাকে প্রথমে প্রিসাইডিং আধাকারিকে জানাতে হবে বিষয়টি। এর পর সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ভোট প্রক্রিয়া সাময়িক স্থগিত রেখে সর্বসমক্ষে একটি ডেমো ভোট দিয়ে দেখবেন যে সেটি সঠিক জায়গায় পরছে কি না। আর এক্ষেত্রে কোন ত্রুটি ধরা পরলে সংশ্লিষ্ট বুথে পুনরায় নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু যদি অভিযোগকারীর বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয় তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনেরও হুশিয়ারি দেন তিনি।
ভিভিপ্যাট সম্পর্কে ভোট কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের অবগত করতে জেলা জুড়ে প্রদর্শনী শিবিরের আয়োজন প্রশাসনের
March 24, 2019
0
ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রায়েল বা সংক্ষেপে ভিভিপ্যাট এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণ। তবে বহু আগে থেকেই বিভিন্ন নির্বাচনে এই অত্যাধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার হলেও সার্বিকভাবে প্রতিটি বুথে ভিভিপ্যাট এর ব্যবহার হবে এই প্রথম। মূলত নির্বাচনে কারচুপি রুখতেই এই যন্ত্রের ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের ব্যাপক সাফল্যের পর বিরোধীদের পক্ষ থেকে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)এ কারচুপির কথা বলা হয়। পাশাপাশি, এই মেশিনে যে সত্যিই কারচুপি করা সম্ভব সে বিষয়ে ডেমোও প্রদর্শন করা হয়। সব মিলিয়ে সেবার বিজেপি তথা এনডিএ জোটের সফলতার জন্য ইভিএমকে কাঠগড়ায় দাড় করায় কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল। এমনকি স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য অনেকেই যন্ত্র চালিত ভোটিং মেশিনের পরিবর্তে ব্যালট পেপার ব্যবহারের কথাও বলেন। যদিও জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইভিএম এর পক্ষেই সায় দেয়। তবে এই যন্ত্রের ব্যাপারে মানুষের সন্দেহ দূর করতে ইভিএম এর সাথে আরও একটি যন্ত্রের সংযোগ করা হয়, যার পোশাকি নাম ভিভিপ্যাট। শেষ সাধারণ নির্বাচনে এই মেশিন কেবল বিশেষ কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়েছিল। যাকে ভিভিপ্যাট এর ট্রায়েলও বলা যেতে পারে। কিন্তু এবার প্রত্যেকটি বুথেই এই মেশিন ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। যদিও এই মেশিনের কার্যকরিতা সম্পর্কে পুরপুরি ওয়াকিবহাল নন রাজ্যের ভোটকর্মী থেকে আরম্ভ করে সাধারণ ভোটার। ফলে এই ভিভিপ্যাট সম্পর্কে ভোটকর্মী ও ভোটারদের অবগত করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এব্যাপারে বছরের শুরুতেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতন করতে ক্যাম্প করে এই যন্ত্রের প্রদর্শন করা হয়। এরপর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রদর্শনী চালু করা হয়। ঠিক কি ধরনের কাজ করে এই ভিভিপ্যাট মেশিন? নির্বাচন কমিশন সুত্রে খবর, বিশেষত, ভোটার তার প্রদেয় ভোট নিরদ্রিস্ত প্রতীকে পড়েছে কি না তা যাচাই করতে এই মেশিন ব্যবহার করতে পারবে। এতদিন কেবল ভোট দিয়েই বুথ থেকে বেরিয়ে আসতে হতো ভোটারদের। সেক্ষেত্রে তাঁর ভোট সঠিক প্রতীকে পড়েছে কি না তা যাচাইএর কোন সুযোগ ছিল না। এবার ভিভিপ্যাট ব্যবহারের ফলে সেই সুযোগ থাকছে নির্বাচকদের সামনে। কমিশন সুত্রে আরও জানা গিয়েছে, ইভিএম এ ভোট দানের পর ভিভিপ্যাট মেশিনের ডিসপ্লে বোর্ড এ কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা যাবে সেই প্রতীক যেখানে ভোটার তার ভোট দান করেছে। যদিও এর কোন স্লিপ বা হার্ড কপি ভোটার পাবে না। শুধুমাত্র নিজের ভোট সঠিক জায়গায় পড়েছে কি না তা দেখতে পাবে সংশ্লিষ্ট ভোটার। এদিকে এই নতুন মেশিন সম্পর্কে ভোটকর্মীরা এখনও তেমন ভাবে ওয়াকিবহাল নন সেকারনে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান বারাসত, বনগাঁ, বসিরহাট, বিধাননগর সহ বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে ভোটকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের অবগত করার চেষ্টা চলছে। তবে প্রত্যেককে যেহেতু আলাদা আলাদা ভাবে হাতে কলমে এই মেশিনের ব্যবহার বোঝানো সম্ভব নয় সেহেতু ক্যাম্পের মধ্যে টেলিভিসনের মাধ্যমে ডেমো দেখিয়ে এই মেশিন সম্পর্কে যাবতীয় সন্দেহ দূর করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেবারে স্কুলের মতো করে ব্ল্যাক বোর্ডের জায়গায় টিভি স্ক্রিন লাগিয়ে ভোটকর্মীদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। আর এই ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতনতা যাতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক ভাবে প্রসারিত হয় সেজন্য জেলার বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, শপিং মল, স্কুল, কলেজ, বাজার এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় এই প্রদর্শনী চলবে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসনের তরফে। এবিসয়ে জেলা শাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ইভিএম এর সাথে সংযুক্ত এই নতুন মেশিন ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সহ ভোট কর্মীদের সচেতন করতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন। জেলা জুড়ে এই কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। বিশেষত বারাসত কালেক্টর অফিসের সামনে যে প্রদর্শনী ক্যাম্প রয়েছে সেটি বেশ কিছুদিন চলবে যাতে জেলার প্রশাসনিক ভবনে আগত মানুষ এখান থেকে ভিভিপ্যাট সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন। পাশাপাশি যদি কোন ভোটার ভোটের দিন এই মেশিন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তবে তাকে প্রথমে প্রিসাইডিং আধাকারিকে জানাতে হবে বিষয়টি। এর পর সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ভোট প্রক্রিয়া সাময়িক স্থগিত রেখে সর্বসমক্ষে একটি ডেমো ভোট দিয়ে দেখবেন যে সেটি সঠিক জায়গায় পরছে কি না। আর এক্ষেত্রে কোন ত্রুটি ধরা পরলে সংশ্লিষ্ট বুথে পুনরায় নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু যদি অভিযোগকারীর বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয় তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনেরও হুশিয়ারি দেন তিনি।

