-->

৭ বছর পর 'ঘর ওয়াপসি',বৈশাখীকে নিয়ে তৃণমূলে ফিরলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়

বাংলার কথা NEWS 24X7
0

 'আমার শিরা-ধমনী সবটাই তৃণমূল': মন্তব্য প্রাক্তন মেয়রের; বিধায়ক রত্নার কটাক্ষ, গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি ও বামেরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: ৩ নভেম্বর

​দীর্ঘ ৭ বছরের রাজনৈতিক দূরত্ব ঘুচিয়ে, সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) প্রত্যাবর্তন করলেন এক সময়ের হেভিওয়েট নেতা, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে তৃণমূল ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে শাসক দলে যোগ দিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের সঙ্গী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শোভন-বৈশাখীর এই 'ঘর ওয়াপসি' রাজ্যের রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এদিন তৃণমূল ভবনে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন। অরূপ বিশ্বাস এই যোগদানকে 'ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা' বলে মন্তব্য করেন। যোগদান পর্ব শেষে শোভন-বৈশাখী যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে। পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "শোভনদা এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দলে যোগ দিলেন। দু'জনকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তাঁরা দলের সৈনিক হিসাবে কাজ করবেন এবং আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের হাত আরও শক্তিশালী করবেন।"

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আত্মিক সংযোগের দাবি দলে ফেরার পর সাংবাদিক সম্মেলনে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের পুরোনো বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, "আমার ধমনী, শিরা সবটাই তৃণমূল কংগ্রেস। এটাই আমার ঘর, এটাই আমার সংসার। আত্মিক যোগাযোগ। দিদির আশীর্বাদেই ঘরে ফিরলাম।" তিনি আরও জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যে দায়িত্ব দেবেন, তিনি তা মাথা পেতে নেবেন এবং সমস্ত শক্তি দিয়ে দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবেন। 

'এক সংসারে' রত্নার প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক কটাক্ষ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফিরে আসা নিয়ে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যটি করেছেন তাঁর স্ত্রী এবং বেহালা পূর্বের বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়। ​রত্না চট্টোপাধ্যায় শোভনবাবুর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানালেও তাঁর পুরোনো মন্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "ওঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। অনেকদিন ঘরে বসেছিলেন, এবার দলের কাজ করুন।" শোভনের 'শিরা-ধমনী' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রত্না কটাক্ষ করে বলেন, "শিরায় তৃণমূল আর বাইরে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, আমি ঠিক মেলাতে পারছি না। যখন ওঁর মনে হয়েছিল বিজেপি ক্ষমতায় আসবে, তখন বিজেপি দুজনকে টিকিট দেয়নি, তারপর বিজেপি ছেড়ে দিয়েছেন।"

​দলের পক্ষ থেকে যদি শোভনকে তাঁর কেন্দ্র (বেহালা পূর্ব) থেকে প্রার্থী করা হয়, তাতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই বলেও রত্না জানান। তিনি বলেন, "আমরা দলের সৈনিক। দল যদি মনে করে দাঁড় করাবে, আমাকে সেটা মেনে নিতেই হবে।" তবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্টতই বিরক্তি প্রকাশ করে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

বিরোধী শিবিরের প্রতিক্রিয়া শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের ঘটনাকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসনিক পদে (NKDA-এর চেয়ারম্যান) ফেরার পর এবার দলীয় পদেও শোভন চট্টোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে পারেন। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে বেহালা পশ্চিম বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হতে পারে বলেও জল্পনা ছড়িয়েছে।

Post a Comment

0 Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Ok, Go it!