চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানের ইমিউনোলজিস্ট ড. আকিহিতো মোরি এবং সুইডেনের বিজ্ঞানী ড. লিসা আন্দারসন। তাঁদের যুগান্তকারী গবেষণার বিষয় ছিল মানবদেহের “অটোইমিউন প্রতিরক্ষা প্রতিক্রিয়া” — অর্থাৎ, দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে নিজস্ব কোষের সঙ্গে লড়াই শুরু করে এবং তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
নোবেল কমিটি সোমবার স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করে যে, তাঁদের এই গবেষণা ভবিষ্যতে ক্যানসার, ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস এবং অন্যান্য অটোইমিউন রোগ নিরাময়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
ড. আকিহিতো মোরি তাঁর দীর্ঘ দুই দশকের গবেষণায় দেখিয়েছেন, দেহের প্রতিরোধক কোষ (T-cells) কীভাবে কিছু নির্দিষ্ট প্রোটিন শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়ে সুস্থ কোষ আক্রমণ করে। অন্যদিকে, ড. লিসা আন্দারসন আবিষ্কার করেছেন এক নতুন জৈব অণু “Regulin-A”, যা এই প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে এবং ভবিষ্যতে ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য হতে পারে।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হান্স মোলিন বলেন, “তাঁদের গবেষণা শুধু মৌলিক বিজ্ঞান নয়, মানবতার সেবায়ও এক বিশাল পদক্ষেপ। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে দেহ কীভাবে নিজেকে রক্ষা করে — এবং কখন ভুলভাবে নিজেকেই আক্রমণ করে।”
পুরস্কার ঘোষণার পর দুই বিজ্ঞানীই এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমরা এই নোবেল পুরস্কার উৎসর্গ করছি বিশ্বের সব চিকিৎসা গবেষকদের, যারা প্রতিদিন অজানা রোগের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই গবেষণার ফলাফল ইতিমধ্যেই ইউরোপ ও জাপানে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ব্যবহৃত হচ্ছে, যার প্রাথমিক ফল “অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক” বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য এই বছর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১১ কোটি টাকা)। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ ডিসেম্বর, নোবেল প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেল-এর জন্মবার্ষিকীতে, স্টকহোমে রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফের উপস্থিতিতে।
