বিশ্বজুড়ে ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস (International Day of the Girl Child) পালিত হলেও, ঠিক এই সময়ে ভারতের মাটিতে এক আন্তর্জাতিক ঘটনা নারী অধিকারের বিষয়টিকে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি-র দিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলন থেকে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না দেওয়ায় তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি তাঁর ভারত সফরের শেষ দিকে ১১ অক্টোবর দিল্লিতে আফগান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ।
অভিযোগ ওঠে, তালিবান প্রতিনিধিদের নির্দেশ অনুসারে, এই সম্মেলনে কোনো নারী সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় ভারতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৈফিয়ত দাবি করে। তারা প্রশ্ন তোলে, ভারতের মাটিতে নারী সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে কীভাবে একটি 'পুরুষ-শুধুমাত্র' সম্মেলন করার অনুমতি দেওয়া হলো?
বিতর্ক বাড়লে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (MEA) দ্রুত এক বিবৃতি জারি করে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই সংবাদ সম্মেলনে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, সেই বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা ছিল না এবং এটি সম্পূর্ণভাবে আফগান দূতাবাস ও তালিবান প্রতিনিধিদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত ছিল।
তালিবান প্রশাসন ক্ষমতা দখলের পর আমির খান মুত্তাকির এটিই ছিল প্রথম উচ্চ-স্তরের ভারত সফর। তাঁর এই সফরের প্রধান ফলশ্রুতি
ভারত আফগানিস্তানের কাবুলে থাকা তার 'টেকনিক্যাল মিশন'-কে 'দূতাবাস' স্তরে উন্নীত করার ইঙ্গিত দিয়েছে, যা কার্যত তালিবান সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ তুলে ধরেন। মুত্তাকি আশ্বাস দেন যে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে, এই দিনটিতে বিশ্বজুড়ে মেয়েদের অধিকার ও মর্যাদা বৃদ্ধির পক্ষে কথা বলা হয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং মেয়েদের জন্য শিক্ষার অধিকার, আইনি সহায়তা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষার ওপর এই দিবসটিতে জোর দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের তাৎপর্যপূর্ণ দিনটিতে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়ার ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে সংবাদ শিরোনামে আসে এবং তালিবান শাসনে নারীদের অধিকার নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়।
